ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিট এবং দলটির সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবত তোড়জোড় চলছে। খসড়া কমিটিতে ত্যাগী ও পোড় খাওয়া নেতারা যেন অবমূল্যায়িত না হন সেদিকে বিশেষ নজর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
তারপরও খসড়া কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের সঠিক মূল্যায়ন না হওয়া, অনুপ্রবেশকারী, বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত, একই পরিবার থেকে একাধিক জনের নাম প্রস্তাব এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগ আমলে নিয়ে কয়েক স্তরে যাচাই বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড।
শনিবার সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিনসহ সারা দেশ থেকে জমা দেয়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি আরো যাচাই বাছাই করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়া অধিকাংশ জেলার প্রস্তাবিত কমিটি জমা হয়েছে। যারা এখনো জমা দিতে পারেরনি, তাদেরকে শিগগির জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আটটি বিভাগীয় টিম গঠন করা হয়েছে। পরবর্তীতে খসড়া কমিটি যাচাই বাাছাই করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখান থেকে যাচাই বাছাইয়ের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। সর্বশেষ তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই বাছাইয়ের পর কমিটির চুড়ান্ত অনুমোদন দেবেন।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, অনেক জেলা কমিটি এরই মধ্যে জমা হয়ে গেছে। জমা হওয়া কমিটির অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগও উঠেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। দলীয় সভানেত্রীর কড়া নির্দেশনা রয়েছে, ত্যাগী নেতাদের যেনন অবমূল্যায়ন করা না হয়। সেদিকটা বিবেচনায় রেখে খসড়া কমিটি যাচাই-বাছাই করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের পছন্দের লোকদের নিয়ে খড়সা কমিটি করেছেন বলে শুনেছি। তবে খসড়া কমিটি জমা দিলেই সেই কমিটির অনুমোদন হবে সেটা ভাবার কোনো উপায় নেই। কারণ এবারের বিষয়টা একেবারে ভিন্ন। কয়েক স্তরে খসড়া কমিটি যাচাই বাছাই করা হবে। আর যদি খুব বেশি অসমযশ্যতা দেখা যায় তাহলেল সেই কমিটি অনুমোদন দেয়া হবে না।
এ প্রসঙ্গে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমরা সতর্ক রয়েছি। আমাদের নেত্রীও এ ব্যাপারে খুবই হার্ড লাইনে আছেন। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা অবশ্যই কমিটি করার সময়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন এবং সতর্ক থাকবেন যেন কমিটিতে ত্যাগী, পোড় খাওয়া নেতারা যেন পতদবঞ্চিত না হয়। তারা পদবঞ্চিত হলে যিনি ওই জেলা বা বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল বলেন, যারা সমাজে নিন্দিত, দুষ্টচক্র বা যাদের কারণে দল বিব্রত হতে পারে তারা আওয়ামী লীগের কমিটিতে আসতে পারবে না বলে আমরা আশাবাদি। পরীক্ষিত, সৎ, কমিটেড, যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড মুজিব আদর্শের, আমাদের নেত্রী শেখ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যাদের আস্থা আছে তারাই কমিটিতে স্থান পাবেন।
Posted ৬:০৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin