করোনা মহামারীর মধ্যেও গতকাল শুক্রবার হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। জাতীয় সংসদে ঢাকা-৫, ঢাকা-১৮, নওগাঁ-৬ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে উপনির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সকাল থেকে কর্মী-সমর্থক নিয়ে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। চার আসনের বিপরীতে মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে ২৫টি। আজ মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য হিসেবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেবেন।
এদিকে, ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নবীউল্লাহ নবী চমক দেখাতে পারেন। জয়ের মালা পরতে পারেন আওয়ামী লীগের প্রাথীকে হারিয়ে। যদিও আজ বিকেলে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে দলটি তারপরও নবীউল্লাহ নবী শেষ পর্যন্ত্ম প্রাথী হচ্ছেন এমনটাই বিশ্বাস স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। কারণ এ আসনে বর্তমানে তার কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। অত্র এলাকায় গত প্রায় চার দশক ধরে নিজের একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন নবীউল্লাহ নবী। কাউন্সিলর হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশব্যাপী নজর কাড়েন এই বিএনপি নেতা। অত্র আসনে প্রার্থী হওয়ার পরপরই চষে বেড়ান গোটা এলাকা। ফলও পান সেই নির্বাচনে। যেখানে দলের হেভিওয়েট অনেক নেতার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেখানে ঢাকা জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পান নবীউল্লাহ। এছাড়া নির্বাচনের পর থেকে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম তরাণ্বিত করেন।
করোনাকালেও ডেমরা যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিভিন্ন ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের উপনির্বাচনেও বিএনপির প্রাথী হচ্ছেন এতে সন্দেহ নেই— এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় অধিবাসী ও নেতা-কর্মীরা।
বেশকিছু কারণে নবীউল্লাহ নবী উপনির্বাচনে চমক সৃষ্টি করতে পারেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন ব্যাপক কোন্দল অন্যতম। এছাড়া নবীউল্লাহ স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় এবং অতীতের সুনাম তার জয়কে তরাণ্বীত করবে।
জানা গেছে, ঢাকার প্রবেশদ্বার ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু। মনুর সঙ্গে সদ্য প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা পরিবারের ব্যাপক দ্বন্দ্ব সর্বজনের জানা। আর মোল্লা পরিবারের রির্জাভ ভোট রয়েছে কমপক্ষে ৬০/৭০ হাজার। মোল্লা পরিবারের বাহিরে প্রার্থী হওয়ায় এই ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নেওয়া হবে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর সঙ্গে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা রয়েছেন তারা কেউই চান না মনু এমপি হোক। কারণ মনুর লোকজন ইতোমধ্যেই এলাকায় প্রভাব দেখানো শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন প্রার্থী ঘোষণার পর পর আচার-আচরণে মনে হচ্ছে, মনু যেন এখনই এমপি হয়ে গেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য, দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে তাই বিদ্রোহ করার সুযোগ নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি (অভিযোগের তীর মনু দিকে) বিএনপির হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি ছাড়া করেছে, তাকে এমপি বানানোর জন্য মাঠে নামতে রাজি নন। অন্যদিকে, নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকে বিএনপির প্রার্থী নবীউল্লাহ নবী। নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তার। তাই আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলের সুযোগে চমক দেখাতে পারেন নবীউল্লাহ নবী।
Posted ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin