কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ইউপি সদস্য ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলারের বিরুদ্ধে অন্যের নামের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল শেখ ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী চালের ডিলার আলিম আল মোরশেদের বিরুদ্ধে এ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হতদরিদ্র নুর ইসলাম শেখ, খবির খান, ভানু বেগম, সাহেব আলী খান ও শ্যামলা বেগম ১০ টাকা মূল্যের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর তালিকাভূক্তির জন্য ২০১৭ সালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইউপি সদস্য বিল্লাল শেখের কাছে জমা দেন। কিন্তু বিল্লাল শেখ তাদের নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর কার্ড ইস্যু করে ডিলারের যোগসাজসে দীর্ঘ ৩ বছর ধরে এসব ব্যক্তির নামের চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন। তালিকায় নাম আছে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ভূক্তভোগীরা বিষয়টি জানতে পেরে ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিলে ঘটনার সত্যতা পান। পরে তারা তালিকায় নাম দেখে তাদের নামের চাল উত্তোলনের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর স্থানীয় ডিলারের কাছে যান। সেখানে গিয়েও তালিকায় তাদের নাম দেখতে পান। কিন্তু এ নামের চাল উত্তোলন করে নিয়ে গেছে বলে ডিলার তাদেরকে জানান।
ভূক্তভোগী ভানু বেগম (৫০) বলেন, ‘আমার নামে ১০ টাকার চালের তালিকায় নাম আছে তা আমি জানতাম না। কিছুদিন আগে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি আমার নামে কার্ড আছে। আমি ডিলারের কাছে চাল আনতে যাই। ডিলার আমাকে বলে আপনার নামের চাল নিয়ে গেছে। আমার মতো আরও অনেকের নাম তালিকায় থাকলেও তারা চাল পায়নি। এ জন্য আমরা কয়েকজন মিলে ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ করেছি।’
চৌকিদার হাচান মিনা বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ১৬ জন সুবিধাভোগীর নামের একটি তালিকা দিয়ে বলা হয়, এদের সকলকে পরিবার ভিত্তিক কার্ডের ফটোকপি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে আসার জন্য। এ সময় চাপ্তা মধ্যপাড়ার কয়েকজন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর তালিকায় তাদের নাম দেখে অবাক হয়ে যান। তারা জানেই না খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর তালিকায় তাদের নাম আছে।’
ইউপি সদস্য বিল্লাল শেখ বলেন, ‘যে কার্ডগুলো নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সে কার্ডগুলো আমি করিনি। কে বা কারা করেছে তা আমি জানি না।’
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ডিলার আলিম আল মোরশেদ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত ২৬২ জনের মাঝে চাল বিতরণ করেছি। তবে কে কে চাল নিয়েছে আমি দেখিনি। ভূক্তভোগীরা আমার কাছে এসেছিল। তবে এসব কার্ডের চাল এবার অন্য কেউ নিতে আসলে আমি তাদেরকে আটকে দেব। ঘটনার সাথে মেম্বাররা জড়িত থাকতে পারে। যেমন আমার ওয়ার্ডের মেম্বার এ রকম কয়েকজনকে চাল খাওয়াতো। আমি বিষয়টি জানতে পেরে এবার সেসব কার্ডের চাল বিতরণ করেনি।’
রাতইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বি. এম. হারুন অর রশিদ পিনুর মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চালের সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব ডিলারের। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বারের কি করার আছে।’
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ রায় অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Posted ৫:১২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৫ অক্টোবর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin