কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাট-ভাটিয়াপাড়া সড়কের দু’পাশ দখল করে বালুর ব্যবসা করছে শতাধিক প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা।
সড়ক ঘেঁষে বালুর চাতাল করা ৩কিলোমিটার সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অসংখ্য ভারি বালু বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কটি ভেঙ্গে দেবে গেছে। এতে সড়কটিতে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পানি-মাঁটি মিলে কাঁদায় সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সড়কটি দিয়ে বেনাপোল, যশোর, নড়াইল, খুলনাসহ ১০ জেলায় চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রী সাধারণের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আসন্ন ঈদে দক্ষিণ-পশ্চিমা লের ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। সড়কে দেবে গিয়ে বিকল হয়ে পড়েছে অসংখ্য যানবাহন। বালু ব্যবসায়ীরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কর্তৃপক্ষ বার বার পদক্ষেপ গ্রহণ করেও তাদের উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়েছে সড়ক বিভাগ। সড়ক বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে জরিমাণা ও চাতাল অপসারণ করলেও কোন কাজে আসেনি।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কালনা-ভাটিয়াপাড়া সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কে ২০১০ সালে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে সর্বশেষ কাজ করা হয়। অত্যন্ত ব্যস্ততম ওই সড়কটির সংস্কারের কাজ প্রতি বছর করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা সড়কটির দু’পাশে বালু রাখার কারণে টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। দুই পাশে রাখা বালুর পানিতে সড়কের সার্বক্ষণিক কাঁদায় একাকার হচ্ছে। সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে রোদের সময় বালু বাতাসে মিশে সড়কে চলাচল যানবাহনসহ মানুষের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
এ সড়কে চলাচলকারী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের অলিয়ার মোল্যা (৪৮) বলেন, ‘ভাটিয়াপাড়া মোড় থেকে কালনাঘাট পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে বড় চাতাল করে পাইপলাইনের মাধ্যমে বালু মজুদ করে রাখছে ব্যবসায়ীরা। ওই সব চাতাল থেকে বালুর পানি রাস্তায় এসে জমা হচ্ছে। ওই পানির কারনে রাস্তার অনেকাংশ ভেঙ্গে ডেবে গেছে। এখানে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। চলতে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ে আছে অনেক যানবাহন। কখনো কখনো ঘটছে দূর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ থেকে কিছু বালু ও ইটের খোয়া ফেলে বেশ কয়েকবার খানাখন্দ ঠিক করে। কিন্তু দু’এক দিন পর একই অবস্থার সৃষ্টি হয়।’
উপজেলার জঙ্গলমুকন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা রনজু শেখ বলেন, ‘এ সড়কে চলাচল করতে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বৃষ্টি হলে সড়কটি কাঁদা ও পানিতে একাকার হয়ে যায়। চলাচল করা যায় না। রোদ হলে বাতাসে বালু ওড়ে। আমরা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।’
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথের উপ নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ সড়কটির ভাটিয়াপাড়া-কালনা অংশে প্রায় ১শ বালুর চাতাল আছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০টি বালুর চাতাল সড়ক থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। দু’এক দিন পর আবার এ অভিযান চালানো হবে। এ উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘এ সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষের জন্য মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কিছু বালুর ব্যবসায়ী এই সড়কটির এমন বেহাল দশা করেছে। তাই আমার এখানে বালুর চাতাল উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছি। এর জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
Posted ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin