কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকহারে গরু চুরি বেড়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে গরু মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত ৬ মাসে কিশোরগঞ্জে প্রায় অর্ধ শতাধিক গরু চুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে বিভিন্ন সৃুত্রে জানা গেছে। একাধিক গরু মালিকরা কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় চুরি যাওয়া গরু উদ্ধাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কতক গরু মালিক জিডিও করেছেন। পুলিশ এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে চুরি যাওয়া গরু উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি ২ জন গরু চোরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও গরু মালিক এবং থানায় দায়েরকৃত মামলা সুত্রে জানা গেছে, জেলা সদরের মহিনন্দ ইউনিয়নের উত্তরপাড়া এলাকার মৃত আঃ সালাম কমান্ডারের ছেলে মোঃ সোহরাব উদ্দিনের গোয়াল ঘর থেকে গত ১৫ ডিসেম্বর রাত ২ঘটিকার সময়ে ৩ লক্ষাধিক টাকা মুল্যের অষ্ট্রেলিয়ান কালো রংয়ের ১টি ষাড় ও লালচে কালো সাদা রংয়ের গর্ভবতী গাভি, একটি দেশীয় লাল রংয়ের গর্ভবতী গাভী চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমার চুরি যাওয়া গরুগুলি কোথাও খোঁজে পাচ্ছিলাম না। অনেক খোাঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে গত ১৯ ডিসেম্বর বাজিতপুর উপজেলার সরারচরের গরু বাজারে আমার একটি গাভী সনাক্ত করি। প্রথমে আমি বাজারের ইজারাদারকে বিষয়টি জানাই। তাৎক্ষনিকভাবে বাজিতপুর থানা ফাঁিড় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরারচর এলাকার মৃত ইবরাহীমের ছেলে রহিম উদ্দিন (৪০), ঢুলিরচরের আ. খালেকের ছেলে মোঃ বাদল মিয়া (৪২)কে গরুসহ পুলিশী হেফাজতে নেন। পরে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানা হতে এসআই জয়নালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে উপস্থিত লোকদের সামনে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান যে তার্দে সহযোগী অজ্ঞাতনামা চোরদের সহায়তায় ঘটনার দিন রাতে উদ্ধারকৃত গরুসহ আরও দুটি গরু গোয়াল ঘরের তালা কেটে সংগোপনে চুরি করে পিকআপ যোগে তাদের হেফাজতে নিয়ে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সরারচর বাজারে অবস্থান করছিলো। পরে তাদেরকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় গরু মালিক সোহরাব উদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা (নং ২০ তাং ২০/১২/২০২০ ইং, ধারা ৪৫৭/৩৮০/৪১১) পেনাল কোর্ড রুজু করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, আসামীদ্বয়কে আদালতে নেওয়া হলে বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেল হাজতেক প্রেরণ করে।
মহিনন্দের ভদ্রপাড়া এলাকার পোল্ট্রি ব্যবসায়ী গরু খামারী মোঃ সাদেকুর রহমান সাদেক বলেন, আমার ৩লাখ টাকা মৃল্যোর ৩টি গরু কয়েক দিন আগে চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছি। একই এলাকার নিতাই নামের এক ব্যক্তির ৩টি গরু কিছুদিন আগে চুরি হয়েছে।
অন্যদিকে মাইজপাড়ার গোলাপ মিয়ার ২টি ষাড়, তমিজ উদ্দিন ভুঞার ৩টি গরু, আবু তাহেরের ১টি ষাড়, সমেদের ১টি ষাড় চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও মাইজখাপন ইউনিয়নের চৌধুরী হাটির মালেকের ২টি গাভী, পাঁচধার আঃ বারিকের ছেলে আ. রশিদের ১টি গাভী, আ.সালামের ছেলে ইমরান হোসেনের ১টি ষাড় গত ১৫ ডিসেম্বর চুরি হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
মাইজখাপন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রোকন উদিন বলেন, আমার বাড়ির কাছেই দুজনের দুটি গরু চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গরু মালিকরা বলেন, মানুষ রাতে সজাগ থেকে পাহারা দিয়েও গরু চুরি ঠেকাতে পারছে না। গরু নিয়ে মালিকরা আতঙ্গে রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (কমিউনিটি পুলিশিং এ- ইন্টিলিজেন্স) জয়নাল আবেদীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গরু চুরি ঠেকাতে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি বাজিতপুরের সরারচর থেকে দুজন গরু চোরকে গ্রেফতার করে আদালতে সৌপর্দ করা হয়। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে।
Posted ১২:০২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin