অভিনয়ে তার দক্ষতা আগে থেকেই ছিল। ১৯৮৬ সালে পাঞ্জাবে জন্ম তার। দিল্লিতে বড় হয়েছেন। ছোট থেকেই অভিনয়ের দিকে মন ছিল। খুদে রিচা নিজের বাবাকে নকল করতেন। বাবার ভুঁড়ি ছিল বলে জামার ভেতরে বালিশ নিয়ে বাবার নকল করতেন।
দিল্লি থেকে ইতিহাস নিয়ে স্নাতক। পাশ করেই তিনি মডেলিং শুরু করেন। ফের মঞ্চে পা রাখেন। বিখ্যাত ব্রিটিশ পরিচালক বেরি জনের তত্ত্বাবধানে মঞ্চাভিনয় শেখেন।
সাংবাদিকতা নিয়ে ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন রিচা চাড্ডা। মুম্বাই যাওয়ার পর রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন প্রথম প্রথম। এমনকি ‘আহিস্তা আহিস্তা’-র ছবির জন্য অভিনেতা অভয় দেওলের সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি অডিশন দিতেন।
দুঃখের বিষয়, অভিনেত্রী হিসেবে বলিউডে স্ট্রাগল করার সময়ে তার অভিনয় দক্ষতা নিয়ে কেউ কথাই বলতেন না। সবাই তার চেহারা দেখে তাকে নাকচ করে দিতেন। কখনো তার ঠোঁট নিয়ে সমস্যা। কখনো তার নাক নিয়ে। কখনো বা গোটা শরীরের আকৃতি নিয়েও কুমন্তব্যের সম্মুখীন হতে হয় রিচাকে।
পরিচালক দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ওয়ে লাকি লাকি ওয়ে ছবি’-তে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। খুব বড় চরিত্র না হলেও নজর কেড়েছিলেন তিনি। কিন্তু পর্দায় তার অভিনয় দেখার পরেও তার শরীর নিয়ে মন্তব্য করতে থাকে অনেকেই। কিন্তু দু-একজন সমালোচক তার অভিনয় ক্ষমতার প্রশংসা না করে পারেননি।
‘ওয়ে লাকি লাকি ওয়ে’ ছবিটির স্ক্রিনিং চলছিল গোয়াতে। সে সময়ে খবর আসে মুম্বাই হামলার। ২৬/১১-র সেই ভয়াবহ জঙ্গী হামলায় প্রাণহানি তো হলই। মানসিক রোগও বেড়ে গেল বাণিজ্যনগরীর মানুষের মধ্যে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হল সিনেমা জগতও। সেই সময়ে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবিটি। কিন্তু দর্শক ছবি দেখতে হলে গেলেন না।
এরপর দুই বছর ধরে কোনো কাজ পাননি তিনি। পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের ‘ডেভ ডি’ ছবির মুখ্য চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন রিচা। কিন্তু শেষ মেশ কলকি কেকলা এই ছবিতে অভিনয় করেন।
‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’ ছবির জন্য অনুরাগ কাশ্যপের এমন এক অভিনেত্রীর প্রয়োজন ছিল, যিনি তরুণী ও মধ্য বয়সি-দুই চরিত্রেই মানিয়ে যাবেন। সেখানেই ‘নাগমা খাতুন’ চরিত্রের জন্য বেছে নেয়া হয় রিচা চাড্ডাকে। মনোজ বাজপেয়ীর স্ত্রী ও নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করে সবাইকে চমকে দেন।
দু’বছর তার কাছে কোনো সুযোগ ছিল না। কিন্তু নাগমা খাতুনের চরিত্রের কারণে তার কাছে ফিল্মফেয়ার থেকে শুরু করে সমস্ত নামিদামি পুরস্কার তার ঝুলিতে আসতে থাকে। তারপর ১১টি ছবির সুযোগ আসে তার কাছে।
Posted ৩:২২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin