কফিনে আসছে একের পর এক লাশ। কাছের মানুষের নিথর দেহ নিয়ে স্বজনদের আহজারি। আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। কেউ ধরে রাখতে পারছে চোখের পানি। কেউ কাদছে অঝরো। কেউ আবার কাদছে গুমরে। দৃশ্যটি শনিবার সন্ধায় নারায়ণগঞ্জের তল্লার বোমালা বাড়ির খেলার মাঠে। একই এলাকার বায়তুল সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে দ্বগ্ধ হয়ে নিহতের জানাযার আগের চিত্র এটি।
তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে অগ্নিকাণ্ডে মৃত চারজনের জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা হলেন কুদ্দুস বেপারি, সাব্বির, জুবায়ের ও হুমায়ুন কবির। তল্লা সবুজবাগ জামে মসজিদের ইমাম জানাযা নামাজ পড়ান।
বাকিদের জানাযার প্রস্তুতি চলছে। তার আগে লাশ গ্রহণ করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক। তিনি স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দিচ্ছেন লাশের কফিন।
লাশ গ্রহণের পর কান্না জড়িত কণ্ঠে শিশু জুবায়েরের মা গার্মেন্টকর্মী রাহিমা বেগম বলেন, জুবায়েরের বাবা জুলহাস ও আমি ফতুল্লার কায়েমপুরে পৃথক দুটি গার্মেন্টে কাজ করি। এক বছর বয়সে জুবায়েরকে গ্রামের বাড়ি বরিশালের গন্ডাদুলা গ্রামে তার দাদীর কাছে রেখে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় ভাড়া বাসায় উঠি। এরপর স্বামী-স্ত্রী দু‘জনেই কাজে যোগ দেই। গ্রাম থেকে আমার শাশুড়ি ফোন করে জানায় জুবায়ের স্কুলে যেতে চায়, পড়তে চায়। এরপর জুবায়েরের বাবাকে বললাম ছেলেতো বড় হয়েছে। স্কুলে পড়ার বয়স হইছে। জুবায়েররে লইয়া আও।
কোরবানীর ঈদের পর জুবায়েরকে নিয়ে আসি আমাদের কাছে। এরপর বাড়ির কাছে সবুজবাগ মডেল কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তিও করেছি। স্কুল থেকে মাস্টাররা বললো করোনা গেলে স্কুলে দিয়ে যাবেন। এখনতো জুবায়ের আর কোনো দিন স্কুলে যাবে না।
তিনি বলেন, জুবায়ের তার বাবার সাথে প্রতি ওয়াক্তে নামাজ পড়তে যেতো। শুক্রবারও গিয়েছিল। তার বাবার অবস্থাও ভালো না। আমি এখন কী করমু?
Posted ৪:১৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin