রিজেন্ট হাসপাতাল দিয়ে কেবল স্বাস্থ্য সেবায় প্রতারণা নয়, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের ক্ষেত্রেও মহাজালিয়াতি করেছেন প্রতারণার জাদুকর সাহেদ। নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের। ইন্টারনেটে ‘আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস কোম্পানি’ খুলে করোনা মহামারীতে এমন ভয়ঙ্কর প্রতারণার বিষয়টি এরই মধ্যে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে স্বীকার করেছেন সাহেদ।
১০ দিনের জিজ্ঞাসাবাদের গতকাল অতিবাহিত হয়েছে দ্বিতীয় দিন। দ্বিতীয় দিনেই এমন চাঞ্চল্যকর প্রতারণার তথ্য সাহেদের কাছ থেকে আদায় করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সাহেদের কাছ থেকে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদায় করা সম্ভব। রিমান্ডে থাকা সাহেদের মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন বলেন, করোনা চিকিৎসায় সরবরাহকৃত সুরক্ষা সামগ্রী নিয়েও প্রতারণার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সাহেদ এই অপরাধটি কবুল করেন।
সাহেদ ফেসবুকে ভুয়া কোম্পানির নামে পেজ খুলে প্রতারণা করতেন উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিবি বলেন, সাহেদ ফেসবুকে আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি নামের পেজ খুলে এই করোনাকালীন সময়ে পিপিই, মাস্ক ও ডেথ বডি ক্যারিয়ার ব্যাগ সাপ্লাই দিয়েছেন। স্বাস্থ্য খাতে সে প্রায় ৫০ হাজার পিপিই, ১ লাখ মাস্ক ও ২০ হাজার বডি ক্যারিয়ার ব্যাগ সাপ্লাই দিয়েছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য দিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি নামের কোনো গার্মেন্টসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সে সাব কনট্রাক্টে ছোট গার্মেন্ট ও ফ্যাক্টরি থেকে নিম্নমানের কাপড় দিয়ে এসব সুরক্ষা সামগ্রী তৈরি করিয়েছিল। আমরা ধারণা করছি তার সাপ্লাই দেওয়া নিম্নমানের এসব সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করে প্রথম দিকে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিতরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
জানা গেছে, বর্তমানে ইন্টারনেট থেকে আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস কোম্পানির ওয়েবপেজ বন্ধ করে রেখেছেন সাহেদ। তবে ওই সময় ওই পেজে উল্লেখ করে রেখেছিল, আলবার্ট থেকে তারা কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানি করা হয়। আর সেই আলবার্টের লোগো ব্যবহার করেই সরবরাহকৃত সুরক্ষা সামগ্রী বিদেশি বলেই চালিয়ে দিয়েছিলেন সাহেদ।
প্রসঙ্গত, রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনিয়ম এবং প্রতারণার অভিযোগে ৬ জুলাই র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) একটি দল উত্তরায় অবস্থিত হাসপাতালের একটি শাখায় অভিযান চালায়। সেখানে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দেওয়াসহ নানা ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পায় র?্যাব। পরে অনিয়মের অভিযোগে রিজেন্টের দুটি হাসপাতাল সিলগালা করে র্যাব। গত বুধবার ভোররাতে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করে র্যাব।
Posted ২:৪১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin