অনেক চড়াই-উতড়াই শেষে নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হতে শুরু করে পদ্মা সেতু। ১০ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে শেষ স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা তথা সারাদেশের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হলো। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে প্রকল্পটি। পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি ৯০ দশমিক ৫০ ভাগ ও আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ০৩ ভাগ। নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৭৫ ভাগ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২১ সালের জুন মাসের পরে গণমানুষের জন্য উন্মুক্ত হবে পদ্মা সেতু।
বহুল আলোচিত এই সেতুটির মূল কাঠামোর রং ধূসর। এই বিশেষ রংটি বেছে নেওয়ার পেছনে রয়েছে বিশেষ কারণ।
পদ্মায় শুধু একটা সেতু নয়, দেশের লাখো মানুষের আবেগ অনুভূতি জড়িয়ে আছে এই সেতুর সঙ্গে। তবে এটি শুধু বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নয়, কারিগরি দিক থেকেও বিশ্বের মধ্যে নানা কারণে অনন্য বাংলাদেশের এ সেতুটি। পদ্মা সেতু যখন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন আলোকসজ্জার পরিকল্পনাও রয়েছে সেতুটিকে ঘিরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেতু বিভাগের একজন কর্মকর্তা একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ধূসর রঙের মধ্যে আলো ফেললে বেশি ফুটে উঠবে। এ জন্যই এই রং বাছাই করা হয়েছে। রং সরবরাহ করছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি। তিনি বলেন, এই রং ২৫ বছর স্থায়ী হবে বলে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পদ্মা সেতুর চূড়ান্ত স্প্যানটি বসানোর সেই মাহেন্দ্রক্ষণে অনেকেই ছুটে যান সেতুটির কাছে। তারা উপভোগ করেন এই জয়যাত্রা। মিছিলও বের করেন অনেকে।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। এরপর একে একে নানা বাধা পেরিয়ে ও নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তিন বছর দুই মাস ১০ দিনে সেতুর সব স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হলো।
এখনও সেতুর আরও কিছু কাজ বাকি আছে। যেমন- রোডওয়ে স্ল্যাব, রেলওয়ে স্ল্যাব, সুপার-টি গার্ডার বসানো। স্ল্যাবের ওপর পিচ ঢালাইয়ের কাজ, আলোকসজ্জা, ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজও বাকি আছে। সব মিলিয়ে যান চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করতে আরও এক বছর লাগতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯১ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ ভাগ। মূল সেতু কাজের চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ১৭ ভাগ। নদীশাসন কাজের চুক্তিমূল্য ৮ হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা।
Posted ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin