রাজধানীর পল্লবীতে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা না পেয়ে এক বেনারশি শাড়ির ব্যবসায়ীসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পল্লবীর এভিনিউ-৫ এলাকায় হাজী হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-বেনারশি শাড়ির ব্যবসায়ী সৈয়দ ফয়েজ, ইমরান ও জুয়েল। আহতরা শহীদ সরোওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আহত ফয়েজের ভাই সৈয়দ সাদ্দাম হোসেন। হামলার ঘটনায় স্থানীয় সন্ত্রাসী কামরুল হাসান জয়, মো. সোহাগ ওরফে হাণ্ডু সোহাগ, তিসান, রাসেল, শাকিল, আমান, আকাশ, সৈকত, মাহবুব, ইমন, রাকিবুল ইসলাম বেপারীসহ অচেনা ৭ থেকে ৮ জনকে এজাহারে অভিযুক্ত করেছেন তিনি।এখন পর্যন্ত পুলিশ অভিযুক্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
সৈয়দ সাদ্দাম হোসেন জানান, পল্লবীর সেকশন-১১ ৩ নম্বর এ্যাভিনিউ এলাকায় সপরিবারে বসবাস করেন তার ভাই আহত সৈয়দ ফয়েজ। পল্লবীর সেকশন-১০ এ-ব্লকের বাইতুল সালাত জামে মসজিদ মার্কেটের নিচ তলায় ‘সামিয়া সিল্ক হাউজ’ নামে তার একটি বেনারশি শাড়ির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত রোববার কামরুল হাসান জয় তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ফয়েজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে জয়সহ অভিযুক্ত অন্যরা ফয়েজকে হত্যার হুমকি দেয়।
গত বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফয়েজের সঙ্গে তার পরিচিত ইমরান ও জুয়েল সেকশন-১১, সি-ব্লকের এভিনিউ-৫ এলাকায় হাজী হোটেলের সামনে চা পান করছিলেন। এ সময় জয় ও তার ক্যাডার বাহিনী চাপাতি দিয়ে প্রকাশ্যে ফয়েজ, ইমরান ও জুয়েলকে এলোপাতাড়ি কোপায়।
তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা চাঁদা না দিলে এবার ফয়েজকে হত্যা করা হবে হুমকি দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে ভর্তি করেন সাদ্দাম হোসেন। ঘটনার রাতেই হামলার বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও জয়সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী এই নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্যে তাদের হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জানা গেছে, অভিযুক্ত কামরুল হাসান জয় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের উপ-স্কুল ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। স্থানীয় এক কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতার ছত্রছায়ায় এলাকায় বর্তমানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন তিনি। তার রয়েছে বিশাল এক ‘কিশোর গ্যাং’ বাহিনী। কখন কী হয় এই আশঙ্কায় এই বাহিনীর ভয়ে কেউ তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে বরাবরই ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকেছেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা ও তার বাহিনী।
বেনারশি ব্যবসায়ী ফয়েজের ওপর হামলার ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান আছাদ জানান, ব্যবসায়ীসহ কয়েকজনকে কোপানোর ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Posted ৪:৪৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin