বরিশাল মহানগর পুলিশকে (বিএমপি) ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। এই সময়ের মধ্যে বিএমপি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াজুলকে কোতোয়ালি থানা থেকে প্রত্যাহারের না করা হলে মানববন্ধন, প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ করে দেওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে জানায় সংগঠনটি।
আজ মঙ্গলবার বিএমএ’র জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন।
ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে বিএমপি পুলিশের এসআই রিয়াজুলকে কোতোয়ালি থানা থেকে প্রত্যাহার, বিএমএ’র জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং আগামীতে যেন কোনো চিকিৎসককে হয়রানি না করা হয় সে দাবি জানানো হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপরোক্ত দাবি পূরণের জন্য আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না করা হলে বরিশালের চিকিৎসকরা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
বিএমএ নেতারা জানান, গত ২২ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে বিএমএ বরিশাল শাখার সভাপতি ডা. মো. ইসতিয়াক হোসেনের সঙ্গে বিএমপি পুলিশের এসআই রিয়াজুল অসদাচারণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। বিষয়টিতে চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাই ওই এসআইকে কোতোয়ালি মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার ও তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ইতিপূর্বে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বিএমএ দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনেও এই দাবি পূরণ হয়নি। এ কারণে মঙ্গলবার বিএমএ জরুরি বৈঠক করে এই আল্টিমেটাম দেয়।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর মানিক কারিকর নামের এক রোগীর অপারেশন করেন ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ডা. এম.এস রহমান সুমন। ওই চিকিৎসক ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের নিয়োগকৃত চিকিৎসক নন, কেবলমাত্র কনসালটেন্ট হিসেবে চেম্বার বা অপারেশন করেন। তাই অপারেশন পরবর্তী জটিলতা সৃষ্টি হলে এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ইসতিয়াক হোসেনের কাছে বিষয়টি রোগী অবহিত করেন। তিনি রোগীর প্রতি মানবিক দিক বিবেচনা করে পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই রোগী।
ওই দিন প্রাথমিক তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে এসআই রিয়াজুল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করেই ২২ ডিসেম্বার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে যান। এ সময় মোবাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও বিএমএ বরিশাল শাখার সভাপতি ডা. মো. ইসতিয়াক হোসেনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তাকে মামলায় ২ নম্বর আসামি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার হুমকি দেন এসআই রিয়াজুল। ওই রোগীর চিকিৎসায় কোনো ধরনের সংশ্লিষ্ট না থাকা সত্ত্বেও মামলা গ্রহণ করে তাকে হয়রানিমূলকভাবে ২ নম্বর আসামি করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বেলা ১২টা বিএমএ’র সভাপতি ডা. মো. ইসতিয়াক হোসেনের সভাপতিত্বে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ কনফারেন্স কক্ষে জরুরি এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কলেজ অধ্যক্ষ ডা. এসএম সরওয়ার, সাবেক অধ্যক্ষ ডা. রনিজৎ খা, সহসভাপতি ও সাবেক অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ মাকসুমুল হক, সাধারণ সম্পদাক প্রফেসর ডা. মো. মনিরুজ্জামান শাহিনসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin