পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম ফুল হচ্ছে সুজিপানা। এগুলো এতটাই ক্ষুদ্র হয় যে একটি কণা দেখতে মাইক্রোস্কোপ দরকার হবে। পুকুর জলাশয়ে সচরাচর দেখা মেলে এদের।
একবীজপত্রী উদ্ভিদ বর্গের লেমনেসিয়া গোত্রের অন্তর্গত অবাধ ভাসমান জলজ সপুষ্পক উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম ওলফিয়া আরিজাহ। নাম খুব কঠিন মনে হলেও এটির সঙ্গে কিন্তু সবাই কমবেশি পরিচিত আমরা। প্রায় পুকুর বা জলাশয়ে এটি দেখে থাকবেন। এক ধরনের শ্যাওলা বলতে পারেন একে। তবে এগুলো এক ধরনের ফুল। যেগুলো অনেক বেশি ক্ষুদ্র হয়ে থাকে।
পানিতে চরে বেড়ানো পাখিদের প্রিয়খাদ্য এটি। দ্রুত বংশবৃদ্ধিতে অন্যান্য গাছগাছালিকে সহজেই ছাড়িযে যায় এবং খরা, ঠান্ডা, খাদ্যাভাব ইত্যাদি পরিবেশগত দুর্যোগেও টিকে থাকতে পারে। শুধু যে পাখিদের খাদ্য তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন দেশে মানুষের খাদ্যাভ্যাসেও রয়েছে এটি। সালাদ হিসেবে খাদ্যযোগ্য প্রোটিন, ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘বি’ সমৃদ্ধ। মায়ানমার, লাওস ও উত্তর থাইল্যান্ডে।
সপুষ্পক হলেও সুজিপানায় দৈবাৎ ফুল ফোটে, বংশবৃদ্ধি মূলত অঙ্গজ-মুকুলে। এগুলো বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আছে গত এক শতক ধরে। এই ক্ষুদ্র ফুল উৎপাদনকারী উদ্ভিদটি হচ্ছে থ্যালাস (যে উদ্ভিদ পাতা, শাখা-প্রশাখা এবং মূলে বিন্যস্ত নয়) প্রজাতির উদ্ভিদ।
সবুজ বা হলুদাভ সবুজ বর্ণের এই উদ্ভিদটির কোনো মূল নেই। উদ্ভিদটির দৈর্ঘ্য ১ থেকে ৫ মি.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর কোনো স্বতন্ত্র কাণ্ড ও পাতা নেই। গোটা উদ্ভিদটাই আসলে চ্যাপ্টা ছোট একটি পত্রকল্প কাঠামো বা ফ্রন্ড। এ ফ্রন্ড নিচে ঝুলন্ত এক বা একাধিক কৈশিক মূলসহ একক বা দলবদ্ধ থাকে।
ফুল সাধারণত উদ্ভিদটির ওপরের স্তরে জন্মে থাকে। এর একটি করে পুংকেশর ও গর্ভকেশর থাকে। এর সম্পূর্ণ পুষ্পবিন্যাসের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১ মি.মি. হয়ে থাকে। ওলফিয়া শতকরা ৮০ ভাগ প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি উদ্ভিদ। আদর্শ পরিবেশে এগুলোর জীবনকাল ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দ্বিগুণ হয়ে যায়।
Posted ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৮ নভেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin