শেখ ফাহিম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি:
অনিয়ম, দূর্নীতি এবং শেষ পর্যন্ত চুরির কবলে পড়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ। প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে গত ৯ আগস্ট রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এর দরুন জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একুশে ফেব্রুয়ারি লাইব্রেরী ভবন থেকে কম্পিউটার এবং কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, ঈদের ছুটির পর আমরা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করি এবং আজ দপ্তর খোলার পর লাইব্রেরিতে কর্মরত কর্মচারীরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে এসে জানান যে ৯১ টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে।
এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না বলে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আইনজীবীর সাথে কথা বলেছি।
কিন্তু আজ ১০ আগস্ট সোমবার জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমের নিকটে জানা যায়
গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদত্ত চুরিকৃত কম্পিউটারের সংখ্যার তথ্যগত ত্রুটি ছিলো। আজ সকালে লাইব্রেরিয়ানসহ সকলে সরেজমিনে পরিদর্শনের পর নিশ্চিত হয়েছেন ৯১ টি নয় মোট ৪৯ টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কম্পিউটার চুরির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইন অনুষদের ডিন জনাব কুদ্দুস মিয়াকে সভাপতি ও রেজিস্ট্রার ড. নূর উদ্দীন আহমেদকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর আব্দুর রহিম, বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী এস্কান্দার আলী, প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান, ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান নাছিরুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর মো. নজরুল ইসলাম।
কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের দিকটা অনেকটা অরক্ষিত। সেখানে সুরক্ষিতদেয়াল না থাকায় দুর্বৃত্তরা সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়তে পারে। এ কারণেই বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছে তারা।
এর আগে এই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটেছে দুই দফায়। ২০১৭ সালে ৫০টি ও ২০১৮ সালে ৪৭টি কম্পিউটার নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এবার ৪৯ টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকেই একবার বেশ কয়েকটি কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায় – আমি এবং আমার কিছু বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসলে আমাদেরকে প্রক্টর স্যারের নিকট ফোন দিতে বলা হয়। প্রক্টর স্যারকে ফোন দিলে উনি আমাকে রেজিস্ট্রার স্যারের সাথে কথা বলে অনুমতি নিতে বলে। অথচ ইতিমধ্যেই দেখা যায় স্থানীয় অনেক ছেলে এবং মেয়েরা ক্যাম্পাসের ভিতর ঘোরাফেরা করছে। যেখানে কড়া নিরাপত্তার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রবেশ করতে দেয় না সেখানে এত বড় চুরির বিষয়টির দায় প্রশাসন এড়াতে পারবেনা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে, কিন্তু গত ২৩ জুলাই বন্ধের পর থেকে প্রায় ২০ জন নিরাপত্তা কর্মী কোন ছুটি ছাড়া দ্বায়িত্ব পালন করতে কাজে আসেন নি। এ বিষয়টি মাননীয় উপাচার্য মহোদয় এবং রেজিস্ট্রারকে আমি অবগত করেছি।
কিন্তু তারা উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেননি। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার পরও এতো বড় ঘটনা কিভাবে ঘটতে পারে যৌক্তিক জবাব এখনও পাওয়া যায়নি।
Posted ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১০ আগস্ট ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin