করোনার এই কঠিন সময়ে এ বছর বাংলাদেশ সফর করে গেছে উইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া। ক’দিন পর আসছে নিউজিল্যান্ড। মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে ক্রিকেট খেলতে আসার জন্য দলগুলো অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। একই সঙ্গে একটা আক্ষেপও রয়েছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে নিশ্ছিদ্র বায়ো-বাবল করার পরও কোনো দলই তাদের সেরা একাদশ নিয়ে আসছে না। এর মধ্যে ২৪ আগস্ট ঢাকায় পা রাখতে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের দল ঘোষণা তো বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে অনেকটা অবজ্ঞার শামিল। তাদের টি২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডের একজনও বাংলাদেশে আসছেন না। অথচ পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা ঠিকই বিশ্বকাপ দলের পাঁচজনকে নিয়ে টি২০ খেলবে।
তারকা ক্রিকেটারদের না আসার পেছনে দলগুলো কারণ হিসেবে দেখাচ্ছে বায়ো-বাবলের বন্দি জীবন। অনেকেই নাকি মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাই কোনো বোর্ডই নাকি এখন ক্রিকেটারদের সফরের ব্যাপারে জোরাজুরি করেন না। পুরো ব্যাপারটাই খেলোয়াড়দের ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেন। বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের ভয়ে জেসন হোল্ডার, কিয়েরন পোলার্ড, এভিন লুইস, শিমরন হেটমেয়ার, নিকোলাস পুরানসহ উইন্ডিজের সেরা ১০ জন বাংলাদেশ সফর থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। মার্চে শ্রীলঙ্কাও খর্ব শক্তির দল নিয়েই এসেছিল। যদিও লঙ্কানরা একটা ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখন তাদের দল আরও আনকোরা। ক’দিন আগে দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে তো একেবারে নবীনদের নিয়ে খেলেছে তারা। তাই শ্রীলঙ্কা দল নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা সমীচীন নয়। টি২০ সিরিজ খেলে মাত্রই বিদায় নেওয়া অস্ট্রেলিয়া সফরে আসে স্মিথ, ওয়ার্নার, ফিঞ্চ, ম্যাক্সওয়েল, কামিন্সসহ সেরা আটজনকে ছাড়া। তাদের মধ্যে অল্প ক’জন চোট এবং অধিকাংশই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সফর থেকে বিরত থাকেন। অস্ট্রেলিয়ানরা বাংলাদেশে আসার আগে উইন্ডিজ সফর করেছে। সেখানেও এই তারকারা ছিলেন না। কাছাকাছি সময়ে
দুটি সফরে ছিলেন না বলেই এখানে প্রশ্নটা কম উঠবে।
কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বেলায় তো এই প্রশ্ন উঠবেই। একই সময়ে বের হওয়া দুই সফরের জন্য দলের মধ্যে কী বৈষম্য! চার মাসের এশিয়া সফরে বেরিয়েছে কিউইরা। বাংলাদেশে পাঁচটি টি২০ খেলে তারা সরাসরি যাবে পাকিস্তান। সেখানে তারা তিনটি ওয়ানডে ও পাঁচটি টি২০ খেলবে। বাংলাদেশে যে দলটি আসবে সেটি পাকিস্তানে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে। কিন্তু টি২০ সিরিজের আগে দলের সঙ্গে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের পাঁচজন যোগ দেবেন। যার মানে দাঁড়ায়, বাংলাদেশে তারা কোনো রকমে একটি দল পাঠাচ্ছে। আর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করবে তারা। এভাবে তারকাদের সফরে না আসার পেছনে আসলে মূল কারণ হচ্ছে আইপিএল। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে আরব আমিরাতে শুরু হতে যাচ্ছে করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া এবারের আইপিএলের বাকি অংশ। চোটমুক্তভাবে তরতাজা থেকে আইপিএলে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই অস্ট্রেলিয়ার আটজন আসেননি। নিউজিল্যান্ডের উইলিয়ামসন, ট্রেন্ট বোল্ট, কাইল জেমিসন এবং লকি ফার্গুসনও মাল্টি মিলিয়ন ডলারের এই টুর্নামেন্টের কারণেই আসছেন না। নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা মার্টিন গাপটিল, টড অ্যাস্টল, ড্যারেল মিচেল, ইশ সোধি ও মার্ক চ্যাপম্যান তো আইপিএলে নেই। তারাও বাংলাদেশে আসছেন না। অথচ সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে ১৮ বছর বন্ধ থাকা পাকিস্তান সফরে তারা ঠিকই যাচ্ছেন। যদিও কিউই বোর্ড বলছে চার মাসের লম্বা সফরে খেলোয়াড়দের ওপর চাপ কমাতে চারটি দল ঘোষণা হয়েছে।
Posted ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১১ আগস্ট ২০২১
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin