ঝালকাঠি সদর উপজেলার সুগন্ধা পৌর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভাঙচুরের ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমীন মৌসুমী কেকার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
শারমীন মৌসুমী কেকা ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি। কেকা ও শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানসহ ১৭ জনের নামে এ মামলা করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রীতা মণ্ডল বাদী হয়ে সোমবার (১৯ অক্টোবর) ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন।
আদালতের বিচারক এএইচএম ইমরানুর রহমান ঝালকাঠি থানার ওসিকে মামলাটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ থাকলেও ১৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে প্রধান শিক্ষক রীতা মণ্ডল উল্লেখ করেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উত্তর-পূর্ব পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রতীক ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। শহীদ মিনারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা প্রতি বছর ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিলেন।
কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ভালো চোখে দেখছিলেন না স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সদস্যরা।
১৪ আগস্ট বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়া শারমীন মৌসুমী কেকা, আনিসুর রহমান ও ফাতেমা শরীফের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ১২-১৪ জন সন্ত্রাসী শাবল, খুন্তি, কোদাল, হাতুড়ি, রড, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সুগন্ধা পৌর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীরঘেরা খেলার মাঠের গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শহীদ মিনার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
স্থানীয় কিছু লোক ও কয়েকজন অভিভাবক শহীদ মিনার ভাঙার কারণ জানতে চাইলে ১ ও ২ নম্বর আসামি পিস্তল ও ৩ নম্বর আসামি অস্ত্র দেখিয়ে সবাইকে চলে যেতে বাধ্য করেন।
মামলার শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হোসেন, অ্যাডভোকেট বাদশা ভূঁইয়া ও শফিকুল ইসলাম। পরে মামলাটি নথিভুক্ত করতে বলেন বিচারক।
বাদীর আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি। আসামিরা ইচ্ছাকৃতভাবে ভাষা আন্দোলন ও স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার ভাঙচুর করেছেন। এটি মারাত্মক অপরাধ। দ্রুত বিচার আইনে এ ঘটনার বিচার হওয়া উচিত।
Posted ৪:৫২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৯ অক্টোবর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin