পাবনার বেড়ার কাজীরহাটের প্রায় ৩ কিলোমিটার ভাটিতে পোঁচাকোলা ও নাকালিয়া চরে নাব্যতা সঙ্কটের ফলে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বন্দরমূখী ১২টি পণ্যবাহী কার্গোজাহাজ পদ্মা-যমুনার ডুবোচরে আটকা পড়েছে। দিনকে দিনআটকে পড়া জাহাজের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এদিকে নাব্যতা সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করায় পণ্যবাহী জাহাজ পূর্ণলোড নিয়ে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে পৌঁছাতে পাড়ছে না। ফলে মাঝ নদীতে আটকে পড়া জাহাজ থেকে লাইটারেজ করে রাসায়নিক সারসহ বিভিন্ন পণ্য বাঘাবাড়ী বন্দরে আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়ী নৌবন্দর সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-বাঘাবাড়ী নৌপথে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় জ¦ালানী তেল, রাসায়নিক সারসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহনের একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর মাধ্যম। উত্তরাঞ্চল থেকে বাঘাবাড়ী বন্দরের মাধ্যমে চাল ও গমসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। এ নৌপথের ৩টি পয়েন্টে নাব্যতা সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
গত শনিবার দুুুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্রগ্রাম, নারায়নগঞ্জ ও মংলা বন্দর থেকে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এম. ভি আছিয়া খালেক গাজী, মেসার্স করিম শিপিং লাইন্স, ও.টি.শিপার্স ওয়ানন্ড-২, ও.টি. করিম-৬, এম.টি সুলতানা, ওটি আছিয়া বেগম, এম.ভি সুমাইয়া হোসেন, এম.ভি ফয়সাল, এম.ভি ফয়সাল, এম.ভি ফয়সাল-৮,সহ ১২টি জাহাজ পেঁঁঁচাকোলা, চরশিবালয় ও নাকালিয়া চরে বিভিন্ন পয়েন্টে পদ্মা ও যমুনার ডুবোচরে আটকা পড়েছে। কার্গোজাহাজগুলো রাসায়নিক সার, কয়লা, গম ও চাল নিয়ে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে যাচ্ছিল।
বিসিআইসি’র বাঘাবাড়ী ট্রানজিট বাফার গুদাম সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের ১৪টি বাফার গুদামে রাসায়নিক সার চাহিদার ৯০ ভাগ বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে যোগান দেয়া হয়। এখান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা রাসায়নিক সার ট্রাকে করে সড়ক পথে বাফার গুদামগুলোতে সরবরাহ করা হয়। যমুনা নদীর নাব্যতা সঙ্কটে বাফার গুদামগুলোতে আপদকালীন সারের মজুদ গড়ে তোলার কাজ চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। বাঘাবাড়ী নৌরুটে নাব্যতা সঙ্কট সৃষ্টি হওয়ায় আপদকালীন সার মজুদের কাজ কিছুটা বিঘিœত হচ্ছে।
এম. ভি আছিয়া খালেক গাজী এর মাষ্টার মোঃ সোহেল রানা জানান, দৌলতদিয়া থেকে বাঘাবাড়ী নৌবন্দর পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার নৌপথের ৬টি পয়েন্টে পানির গভীরতা কমে দাড়িয়েছে ৭ থেকে ৯ ফুট। সরু হয়ে গেছে নৌচ্যানেল। মোহনগঞ্জ, পেঁচাকোলা পয়েন্ট কার্গোজাহাজ চলাচলের জন্য সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ পয়েন্টে দুটি জাহাজ পাশাপাশি চলাচল করতে পারছে না। ওই পয়েন্টে জেগে উঠা চরের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় দিনদিন চ্যানেলটি আরো সরু হয়ে যাচ্ছে। এই পয়েন্টে দ্রুত ড্রেজিং না করা হলে পণ্যবাহী ও জ¦ালানী তেলবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। দুই দিনে আটকা পড়া আরও ৮ থেকে ১০ জাহাজ এখান থেকেই পণ্য আনলোড করে চলে গেছে বলেও তিনি জানান।
বিআইডব্লিউটিএ এর সহকারী পরিচালক ও বাঘাবাড়ী নৌবন্দরের পোর্ট কর্মকর্তা সাজ্জাদ রহমান বলেন, ‘বাঘাবাড়ী থেকে আরিচা পর্যন্ত এই নৌপথে শুস্ক মৌসুমের পর থেকেই আমাদের তিনটি ড্রেজার কাজ করছেন। দ্বিতীয় শ্রেণিভূক্ত বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে সাত ফুটের বেশি ড্রাফট বা গভীরতা নিয়ে কোনো জাহাজ আসার কথা নয়। কিন্তু বেশির ভাগ জাহাজই ১০ থেকে ১২ ফুট ড্রাফট নিয়ে বন্দরে আসছে। ফলে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলে তিনি জানান।’
Posted ১২:৪২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin