চাকরির প্রলোভনে ভারতে নারী বিক্রি চক্রের মূলহোতা মহেনুমুজ্জামান ওরফে প্রতীক খন্দকার ওরফে বাবুকে (২৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার চট্টগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডি জানায়, গ্রেফতার বাবু মালয়েশিয়া, দুবাই ও সৌদি আররে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের উদ্বুদ্ধ করে ভারতে পাচার করত। এরপরে ভারতীয় দালালদের কাছে বিক্রির পর অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হতো এসব নারীদের। মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।
তিনি বলেন, প্রতীক ও তার স্ত্রী জেরিন দুজনই বিভিন্ন বয়েসি নারীদের মালয়েশিয়া, দুবাই, সৌদি আরব ও ভারতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাত। তবে বিদেশে পাঠানোর জন্য ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তারা কোনো টাকা নিত না। প্রথম থেকে শুরু করে ভারতে তাদের বিক্রির আগ পর্যন্ত খুব ভালো ব্যবহার করত। এরপর ভারতে পাচারের পর তাদের অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করত। ওই চক্রের কাছে এসব নারীদের বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিত এ প্রতারকরা।
চক্রটি রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার এক নারীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। ওই নারী যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেখানে সাবলেট হিসেবে ভাড়া ওঠে প্রতীক খন্দকার ও জান্নাতুল ওরফে জেরিন। পরে ওই নারীকে ভালো চাকরি দিয়ে মালয়েশিয়া পাঠাবে বলে প্ররোচিত করত তারা। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ওই নারীকে পাচারকারী চক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে বেনাপোল সীমান্তের একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভুক্তভোগী ওই নারীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাকে ভারতে একটি দালাল চক্রের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করার সময় পুলিশ ওই ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে এবং পাচারকারী চক্রের অন্য এক সদস্যকে আটক করে। এ সময় মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা প্রতীক পালিয়ে যায়।
শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, গত বছরের ২৩ নভেম্বরে সংঘটিত এ ঘটনায় সবুজবাগ থানায় করা মামলায় প্রতারক জেরিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে টানা এক বছর অনুসন্ধানের পর ভারতে নারী বিক্রির জন্য মানবপাচার চক্রের মূলহোতা পলাতক প্রতীক খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আগে গ্রেফতার হওয়া জেরিনসহ দুজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এর আগেও আসামিরা বিভিন্ন নারীকে সৌদি আরব পাঠানোর কথা বলে ভারতে পাচার করে এবং অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করে। প্রতীক খন্দকারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
Posted ৩:১২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৬ আগস্ট ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin