রাজবাড়ীতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে পদ্মা নদী। পদ্মার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হবার কারণে জেলার ৩টি উপজেলার প্রায় ৪৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পদ্মার প্রবল স্রোতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে নৌযান চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
দ্বিতীয় দফা এ বন্যার পানিতে বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ী জেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ উঁচু বাঁধ বা দুরের স্কুলে আশ্রয় নিয়ে বিনিদ্র রজনী যাপন করছেন।
জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাজবাড়ীতে দু’দফায় অব্যাহত পানি বৃদ্ধির কারণে পদ্মার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
এতে জেলার কয়েক হাজার মানুষ বন্যার পানিতে ভাসছেন। জেলার ৪টি উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত অর্ধলক্ষ মানুষ বন্যার পানিতে পানি বন্দি হয়ে পরেছেন। খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে জীবন যাপন করছেন। জেলার চরাঞ্চলের তিন উপজেলার পাঁচটি কমিউনিটি ক্লিনিকে পানি উঠায় তা বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে কিছু ত্রাণ দেয়া হলেও তা অপ্রতুল।
এদিকে পদ্মার প্রবল স্রোতে জেলার সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের গোপালবাড়ী এলাকায় রাজবাড়ী শহররক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২ দিন ধরে তারা রাজবাড়ী শহর রক্ষা বেরি বাঁধের লিকেজ অংশে ১৪ হাজার বালুর বস্তা ফেলে প্রটেকশন দিয়েছেন।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম শেখ জানান, বরাটের একটি জায়গায় শহররক্ষা বাঁধ ইঁদুরের গর্তের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখান দিয়ে লিকেজ করে পানি চুয়িয়েছিল। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে কাজ করে যাচ্ছে। বাঁধ ভেঙে যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পানি উন্নয়নে বোর্ডের এ কর্মকর্তা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করার ফলে ঝুঁকি কমেছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১০ হাজার পরিবারে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। পানি বন্দি এসব মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রসহ রাস্তার দু’পাশে অবস্থান করছেন।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাঈদুজ্জামান খান বলেন, রাজবাড়ীর বরাট এবং মিজানপুর ইউনিয়নে ১ হাজার পরিবারে প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ১৩০ মেট্রিক টন চাল, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ ত্রাণ বিতরণ কাজ শুরু করেছে।
Posted ১২:০২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ জুলাই ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin