শ্রেণি বৈষম্যের এই সমাজে টিকে থাকার লড়াইটা নিত্যদিনের। সমাজের ধনীরা আরো ধনী হতে চায়। আর গরীবরা না খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। কারো বিলাসী জীবন আর কারো রাত কাটে খোলা আকাশের নিচে। দু-মুঠো অন্নের জন্য কিছু মানুষকে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যেতে হয়। কিন্তু সুন্দর একটা পৃথিবী গড়তে হলে এই বৈষম্য কোনো দিনও কাম্য নয়। সব উচু নিচুর ভেদাভেদ ভেঙে দিয়ে সুন্দর আগামীর জন্য শ্রেণিহীন সমাজ গড়ার বিকল্প নেই। এমনই আহ্বান জানিয়ে একটি শিল্পকর্ম তৈরি করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ জয়। যার নাম দিয়েছেন ‘অস্তিত্বের লড়াই’।
জয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। তার তৈরি শিল্পকর্ম অস্তিত্বের লড়াই’ প্রদর্শিত হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে। এই শিল্পকর্মে জন্য তিনি মনোনিত হয়েছেন ভাষা শহীদ গাজীউল হক সম্মাননা পুরস্কারে।
শিল্পকর্মটি সম্পর্কে জয় ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, বর্তমান সমাজে শ্রেণি বৈষম্য সদা বিরাজমান। সমাজের উচু নিচু মানুষের ভেদাভেদ। একবেলার আহার যোগাতে মানুষের কত পরিশ্রম। কিন্তু শ্রেণিবৈষম্য সমাজকে কুলসিত করছে, ভেদাভেদ সৃষ্টি করছে। ‘অস্তিত্বের লড়াই’ শিল্পকর্মটির মাধ্যমে বর্তমান সমাজের শ্রেণি বৈষম্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
শিল্পী তানভীর আহমেদ জয় আরো বলেন, গত ৯ জুন শিল্পকলা একাডেমি ২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদশর্নীর জন্য আমার শিল্পকর্মটি নির্বাচন করে। যা প্রদর্শনীর জন্য মনোনিত হয়। পরে গত ২৯ জুন প্রদর্শনীর উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে আমার ‘অস্তিত্বের লড়াই’ কে ভাষা শহীদ গাজীউল হক সম্মাননা পুরস্কারের জন্য মনোনিত করা হয়। যা আমার জন্য বড় পাওয়া।
‘অস্তিত্বের লড়াই’ শিল্পকর্মটিতে সরাসরি কেউ সহযোগীতা করেনি জয়কে। তবে অন্যসব শিল্পকর্মের মতো এই কাজটিতে তার পরিবার, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক এবং বিভাগের কিছু শুভাকাঙ্খী বড় ভাই এবং বন্ধুরা অনুপ্রেরণা দিয়েছে। যা মূল পাথেয় হিসেবে কাজ করেছে বলে মনে করেন জয়।
এর আগেও জয়ের তিনটি শিল্পকর্ম (বিরাঙ্গনা, সংস্কার এবং বিরোধাভাস) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত ২২তম নবীন শিল্পী শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছে। যেখানে ‘বিরোধাভাস’ নামক শিল্পকর্মটি বিশেষ কিউরেটর গ্যালারিতে স্থান পেয়েছিলো। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে পৃথক পৃথক তিনটি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে জায়গা করে নেয়। শিল্পকর্ম গুলো হলো- পাখি, আবক্ষ এবং মাতৃত্ব। এরমধ্যে ২০১৭ সালে ‘পাখি’ এবং ২০১৯ সালের প্রদর্শনীতে ‘মাতৃত্ব’ নামক দুটি শিল্পকর্ম পুরস্কার অর্জন করে। ২০১৭ সালে উত্তরবঙ্গ শিক্ষার্থী কল্যাণ পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে ‘পাখি’ শিল্পকর্মটি ৫ম স্থান অধিকার করে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন ঢাকার শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ২৪তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২১-এর উদ্ধোধন করা হয়। ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রদর্শনীর কথা থাকলেও সময় বৃদ্ধি করা কারণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের ৭৮৬ জন শিল্পীর সহস্রাধিক শিল্পকর্মের আবেদন জমা পড়েছিল। সেখান থেকে ৩২৩ জন শিল্পীর ৩৪৭টি শিল্পকর্ম নির্বাচন করা হয়।
Posted ২:৫৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট ২০২১
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin