সারা বিশ্ব এখন করোনা মহামারীর কবলে যেন থমকে গেছে। সকল শ্রেণী পেশার মানুষ কোনো না কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি এবং তা নিরসনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(বশেমুরবিপ্রবি) এর এক শিক্ষার্থীর খোলা চিঠি।
বশেমুরবিপ্রবি এর ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল খায়ের বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে অবহিত করে খোলা চিঠির মাধ্যমে জানান,”আমি মনে করি না যে এই খােলা চিঠিটা বিম্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছাবে বা পেছালেও তা কোনোরূপ ফলপ্রসূ হবে। তবুও এই করােনা কালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের একজন হওয়ায় মনের কথাগুলাে লিখছি।
আমরা জানি, বিশ্বজুড়ে যে মহামারীর আপদকাল চলছে তাতে সামাজিক জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা যদি লক্ষ্য করি, প্রত্যেক শ্রেণি পেশার মানুষই এই করােনা কালে নিজেদের কাজে বা পেশায় কর্ম পদ্ধতিতে বিভিন্ন পরিবর্তন এনেছে, ডিজিটালাইজড করেছে, যাতে খুব বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হত না হয়।
ইতোমধ্যে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলােতে নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাও হলে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে অনলাইন ক্লাস। অথচ আমাদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে করে করো দূর হবে, সেদিন আবার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ক্লাস করতে যেতে হবে ক্যাম্পাসে। হ্যাঁ, আমাদের মতো আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, সেখানেও ছাত্রছাত্রীদের অবস্থা আমাদের মতােই। অনার্স লেভেলে এসে একটা বছর মানে আমাদের কাছে অনে দীর্ঘ সময়। থাকে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়ার তাড়া। আর এ সময় এসে যখন ঘরে বসেই চোখের সামনে বছরটাকে বেকার চলে যেতে দেখি তখন আমাদের মানষিক অবস্থা কী হয়, একবার ভেবে দেখার অনুরােধ রইল।
জানি না কেন ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনাে সমাধান খুঁজে পেলেন না সেশনজট থেকে আমাদেরকে মুক্ত করার”।
এছাড়াও সমস্যা সমাধানের কিছু উপায় তিনি উল্লেখ করেন।
যেগুলো হলো, ১. যতদিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সম্ভৱ না হয় ততদিন অনলাইনে পাঠদান করা হােক। কিন্ত অনলাইনে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হবে না।
২ যে সকল ছাত্রছাত্রী প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থানের কারণে অনলাইন পাঠে অংশগ্রহণ করতে পারবে না, তাদের জন্য কোনোরূপ শর্ত (এটেন্ডেন্সের নম্বর কর্তন এবং অনান্য) ছাড়াই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অথবা (B+ এর উপৱে রেজাল্ট কাউন্ট করা হবে না এই শর্ত ভাড়াই) সেমিস্টার ড্রপ দেয়ার সুযোগ রাখা হােক।
৩. ক, প্রতি সেমিস্টার ৪ মাসে নামিয়ে আনা হােক। যার মধ্যে ৩ মাস (৯০ দিন বা অন্তত ৭০ কর্ম দিবস) অনলাইন পাঠদান এবং পরর্তীতে পরীক্ষার জন্য ১ মাস নির্ধারণ করা হােক।
খ,অনলাইন পাঠদানের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে রাখা হোক (শনিবারকে সাপ্তাহিক ছুটি করা হবে না)।
গ. অন্যান্য ছুটিও কমিয়ে আনা হোক। যাতে ৩ মাসে অন্তত ৭০ কার্য দিবস অনলাইন পাঠদান সম্ভব হয়।
*ধরে নিই এ করেনার প্রভাবে আগামী ২০২১ সালেও শ্রেণিকক্ষে পাঠ দান সম্ভব হবে না।
October, 2021 – December 31, 2021: পরীক্ষা প্রস্তুতি এবং অনলাইন প্রিপারেশন ক্লাস।
৪, করেনাকাল অতিক্রান্ত হওয়ার পর যতদ্রুত সম্ভব পরীক্ষায় বসাতে হবে। যা, প্রতি সেমিস্টারের পরীক্ষন ১ মাস ধরে হবে। এবং এক সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হলে ২০ দিন গ্যাপ দিয়ে পরবর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু করতে হবে।
গ. মিডটার্ম পরীক্ষা এর পরিবর্তে এসাইনমেন্ট দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত এবং পরিকল্পনা কাঠামাে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় এর থেকে কার্যকর, নির্ভুল এবং উপযােগী পরিকল্পনা তৈরি করতে সক্ষম। সর্বোপরি আমাদের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কথা বিবেচনা করে আমাদেরকে এই দীর্ঘ সেশনজট থেকে মুক্ত রাখার আবেদন জানাচ্ছি”।
আবুল খায়ের
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ
শিক্ষাবর্ষ (২০১৭-১৮)
Posted ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin