মুফতি তাজুল ইসলাম
আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গা হলো বাজার ও মার্কেট। এটি এমন একটি জায়গা, যা মানুষকে আল্লাহর জিকির ও ইবাদত থেকে ভুলিয়ে রাখে। মানুষের অধিক দুনিয়াপ্রীতির কারণে বাজারগুলো হয়ে উঠেছে ধোঁকা-প্রবঞ্চনা, মিথ্যাচার, বিশ্বাসঘাতকতা ও পাপাচারের স্থান। পাশাপাশি পর্দার লঙ্ঘন তো আছেই। তথাপি জীবনের তাগিদে মানুষকে বাজারে যেতে হবে। ক্রয়-বিক্রয়ও করতে হবে। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা কেনাকাটা করতে গিয়ে আল্লাহর বিধান ভুলে গেলে চলবে না।
বাজার ও মার্কেট এমন স্থান, যেখানে শয়তানের আড্ডা জমে। সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি যদি পারো, তাহলে সর্বপ্রথম বাজারে প্রবেশকারী হবে না এবং সেখান থেকে সর্বশেষ প্রস্থানকারী হবে না (অর্থাৎ পরে যাবে, কিন্তু আগে আসবে)। কেননা বাজার শয়তানের আড্ডাস্থল। সেখানে সে নিজের ঝাণ্ডা গেড়ে বসে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৬৩৪, মুসলিম, হাদিস : ২৪৫১)
তবে হ্যাঁ, প্রয়োজনে বাজার কিংবা মার্কেটে যেতে হবে; কিন্তু সেখানেও আল্লাহকে স্মরণ করবে। বাজারে গমনের আগে দোয়া পড়বে।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বাজারে প্রবেশ করে বলবে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ইয়ুহয়ি ওয়া ইউমিতু বিয়াদিহিল খাইর, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির (অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সব প্রশংসা তাঁর। তিনি জীবিত করেন এবং মৃত্যু দেন। তিনি চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। তাঁর হাতেই সব কল্যাণ। তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।)—এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তার জন্য ১০ লাখ নেকি বরাদ্দ করেন, ১০ লাখ গুনাহ মাফ করেন এবং তার ১০ লাখ মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪২৮)
গ্রামগঞ্জের বাজারের চায়ের দোকানগুলোতে সাধারণত পরনিন্দার আসর সহজেই জমে যায়। যেহেতু সবাই পরিচিত। শহরেও পরিচিত এলাকায় থাকলে এমনটা হতে পারে। তাই শহর কিংবা গ্রাম—যেখানেই হোক, বাজারে গেলে পরনিন্দার আসর জমবে—এমন জায়গা পরিহার করতে হবে। কেননা পরনিন্দা ও অপরের দোষচর্চা নিকৃষ্টতম অভ্যাস। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘পেছনে ও সামনে প্রত্যেক পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ-ধ্বংস।’ (সুরা : হুমাজাহ, আয়াত : ০১)
Posted ২:৪৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin