সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ এবং সুশাসনের অভাব, ভবিষ্যৎ জীবনের অনিশ্চয়তা ও ধর্মীয় জীবন থেকে বিমুখতা, পরকীয়া, দারিদ্রতাসহ নানা কারণে এ ধরনের অপরাধ বেড়েই চলছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ফুলতলা গ্রামে অনুভব মণ্ডল যশ নামে চার বছরের এক শিশু খুন হয়। সে একই গ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা অমিত কুমার মণ্ডলের ছেলে। ২৯ নভেম্বর রাসপূজায় মায়ের সঙ্গে বেড়াতে আসে। পরদিন সকালে মায়ের ঘরেই তার লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ১ ডিসেম্বর সকালে নিজ ভাই অনুপ মণ্ডলের বিরুদ্ধে বটিয়াঘাটা থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা এএসআই অমিত কুমার মণ্ডল। তবে জিজ্ঞাসাবাদে আচরণে সন্দেহজনক হওয়ায় একইদিন রাতে নিহত শিশু যশের মা তনুশ্রী মণ্ডলকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
সবশেষ ৬ ডিসেম্বর পুলিশের সাতদিনের আবেদনের বিপরীতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক নয়ন বিশ্বাস তনুশ্রী মণ্ডলের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে, মামলার প্রধান আসামি নিহত যশের কাকা অনুপ মণ্ডলের পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ১৫ নভেম্বর ১৭ দিনের নবজাতক চুরি ও হত্যার ঘটনা ঘটে। নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে ২৭ নভেম্বর আদালতে হত্যার বর্ণনা ও দায় স্বীকার করেন নবজাতক সোহানার মা শান্তা আক্তার পিংকি। স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই আগের বিয়েসহ বিভিন্ন পারিবারিক ঝামেলায় সন্তানকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।
২৮ নভেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাওয়ালখালীতে দিনদুপুরে চুরি হওয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর নবজাতক শিশু সোহানের লাশ বাড়ির বাথরুমের সেফটিক ট্যাংকি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুর বাবা সোহাগ হোসেন ও মা ফতেমা খাতুনের দেয়া তথ্যমতে পুলিশ ওইদিন ভোরে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা সোহাগকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর নিজের সন্তানকে স্বামী-স্ত্রী মিলে হত্যার কথা স্বীকার করেন। জন্মের পর থেকেই শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তারা শিশুটিকে হত্যা করে বলে জানান সোহাগ।
এ ব্যাপারে খুলনার নারী নেত্রী অ্যাডভোকেট শামীমা সুলতানা শীলু বলেন, বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে পারিবারিক বন্ধনের অবক্ষয়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকা, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীল না হওয়া, অবৈধ সম্পর্ক, নৈতিকতার অভাব, ধর্মীয় অনুশাসন ও পারিবারিক শিক্ষার অভাবে এ ধরনের অপরাধ ঘটছে। এ বিষয়ে প্রশাসন আর আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন।
Posted ৪:৩৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin