রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রতারক মোহাম্মদ সাহেদ বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণার পাশপাশি সরকারের সঙ্গেও প্রতারণা করেছিল। আর সেটি সে করেছিল নিম্নমানের মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ করে। তবে তিনি যে প্রতিষ্ঠানের নামে মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ করেছিলেন সেই প্রতিষ্ঠানেরও বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব ছিল না। আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি এসব সুরক্ষাসামগ্রী সররকারকে সরবরাহ করেছিলেন। তাকে গ্রেফতারের পর ওই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তদন্ত করতে নেমে গোয়েন্দারা কোনো অস্তিত্ব পায়নি। আর এই প্রতারণা করেছিল সাহেদ একটি ফেসবুক পেজ থেকে।
গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস নামে আসলে বাস্তবে কোনো কারখানা বা প্রতিষ্ঠান নেই। সাহেদের এ প্রতিষ্ঠান করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে নিম্নমানের মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ করে। এই প্রতিষ্ঠানের কথা বলে কাজ নিয়ে সাহেদ বিভিন্ন কারখানায় সাবকন্ট্রাক্টে মাস্ক ও পিপিই বানানোর কাজ দিত। সেখান থেকে এসব সুরক্ষাসামগ্রী তৈরি করে সরবরাহ করত। সাহেদ কীভাবে এত টাকা-পয়সার মালিক হলো আমরা তা খতিয়ে দেখছি। বাতেন বলেন, আমাদের পাশাপাশি অন্য সংস্থাও তদন্ত করে দেখছে। আমরা সবকিছুই তদন্ত করছি। এ ছাড়া তার ঠিকাদারি ব্যবসা ও প্রতারণার বিষয়ে আমরা আরও তথ্য পেয়েছি। উত্তরাসহ কয়েকটি থানায় এ সংক্রান্ত পাঁচটি মামলাও হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে অস্তিত্বহীন একটি প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে পিপিই সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হলো সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, কেন দিয়েছে তারাই বলতে পারবে।
সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তি করে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি র্যাবের অভিযানে ওই হাসপাতালের ভিন্ন মুখোশ উন্মোচিত হয়। দেখা যায়, করোনার নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছিল হাসপাতালটি। কেবল এই জালিয়াতিই নয়, ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখতে পান, এ হাসপাতাল মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সে চলছিল ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে। অভিযানের পর সাহেদ পালিয়ে গেলেও পরে তাকে ধরে আইনের আওতায় আনা হয়। এখন সে ১০ দিনের রিমান্ডে রয়েছে।
অন্যদিকে ডা. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং এ সংক্রান্ত মামলার তদন্তের বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ডা. সাবরিনা চিকিৎসক হিসেবে তার ফেসভ্যালু এবং পরিচিতিকে পুঁজি করে প্রতারণা করেছেন। তিনি সরকারি সংস্থার কাজ করছিলেন। তদন্তে তার যেসব অনিয়মের তথ্য আমরা পাব, সেগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়কে (স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) জানাব, তারা অনিয়ম বিবেচনা করবে যে, সেগুলো ডিপার্টমেন্টাল অফেন্স নাকি ক্রিমিনাল অফেন্স। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেব। সাবরিনার অনিয়মের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনো কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্ট মনে হবে তাদেরই আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।
Posted ২:৫৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin