মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রেশ না কাটতেই যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে জমে উঠেছে দুই সিনেট আসনের রানঅফ নির্বাচন। নতুন বছরের (৫ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে আগাম ভোট। মার্কিন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু সিনেটে নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় আসন দুটি পেতে এখন মরিয়া হয়ে লড়ছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দল।
মার্কিনিসহ সকলের চোখ এখন উচ্চকক্ষ সিনেট রানঅফ নির্বাচনের দিকে। কোন দল পেতে যাচ্ছে সিনেটের একচ্ছত্র আধিপত্য। জর্জিয়ার এ দুটি সিনেট আসনে গত ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে কোন প্রার্থী ৫০ ভাগ ভোট না পাওয়ায় ওই নির্বাচন রানঅফ ঘোষণা করা হয়। জর্জিয়া রাজ্যের আইন অনুযায়ী বিজয়ী হতে কাস্টিং ভোটের শতকরা ৫০ ভাগ ভোট পেতে হয় সিনেটের প্রার্থীদের। একশ আসনের মার্কিন উচ্চকক্ষ সিনেটে এখন রিপাবলিকানদের আসন ৫০ এবং প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাট পার্টির আসন ৪৮।
বাইডেনের হোয়াইট হাউসে নির্বিঘ্নভাবে কাজ করতে প্রয়োজন সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। ডেমোক্র্যাটরা জর্জিয়ার দুটি সিনেট আসনে বিজয়ী হলেও সিনেটে তখন দুই দলের আসন হবে সমান। তখন ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের টাই ব্রেকিং ভোটের জোরে ডেমোক্রেটরা সিনেটে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে। অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা চাইছে অত্যন্ত ১টি আসন হলেও জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অক্ষুণ্ণ রাখতে।
নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আগামী ৪ বছর কোন প্রকার বাধা ছাড়াই তার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হলে সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুবই জরুরি। হাই প্রোফাইল নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যে একদফা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন জর্জিয়ায়। আগামী সপ্তাহে ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারে জর্জিয়া সফরের কর্মসূচি রয়েছে।
একটি আসনে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান সিনেটর ডেভিড প্রারডু তার অর্ধেকেরও কম বয়সী চ্যালেঞ্জার জন অসফের মোকাবিলা করছেন। ৭০ বছরের প্রারডুর বিরুদ্ধে লড়ছেন ৩৩ বছরের ডেমোক্র্যাট জন অসফ। অন্য আসনে গভর্নর কর্তৃক দুই বছর আগে নিয়োগ পাওয়া বর্তমান সিনেটের কেলী লাফলার মুখোমুখি হচ্ছেন ডেমোক্র্যাট রাফায়েল ওয়ারনকের সঙ্গে। দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ আটলান্টায় একজন কৃষ্ণাঙ্গ ধর্ম যাজক হিসেবে কাজ করা রাফায়েল ৩ নভেম্বর লাফলারের চাইতে বেশী ভোট পেলেও, ৫০ ভাগের মার্জিন অতিক্রম করতে ব্যর্থ হন।
গত ৩ নভেম্বর-এর নির্বাচনে ডেভিড প্রারডু ২৪ লাখ ৬২ হাজার ৬১৭ অর্থ্যাৎ ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পান। অন্যদিকে জন অসসের ঘরে ঢোকে ২৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫১৯ টি ভোট। অর্থাৎ ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট লাভ করেন। আর, রাফায়েল ওয়ারনক ১৬ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৫টি ভোট পান। তার দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং লাফলার ১২ লাখ ৭৩ হাজার ২১৪টি। ফলে ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পান তিনি।
৩ নভেম্বরের মার্কিন জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ডেমোক্রেট পার্টি ইতিমধ্যেই নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিটিভস-এর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করেছে। তাদের এখন প্রয়োজন উচ্চ কক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ। তবেই বাইডেন-হ্যারিসের সরকারকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন কাজে বাধার সম্মুখীন হতে হবে না।
Posted ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin