ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে ৯ বছরের এক শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগে ইসমাইল হোসেন (৩০) নামে এক মাদরাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের ময়নাকুড়ি হলকার ঘর হাফেজিয়া মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আজ বুধবার ইসমাইল হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে রংপুর জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
আটক ইসমাইল হোসেন রংপুর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের হল্লাইপাড়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর পুত্র। এর আগেও সে অন্য শিশুদের নিপীড়ন করলে তাকে আলাদা একটি ঘরে থাকার নির্দেশ দেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
শিশুর পরিবার ও থানা সুত্রে জানা যায়, গত সোমবার মাদরাসার শিশুদের দিয়ে সড়কের মোড় ও বিভিন্ন স্থান থেকে মাদরাসার নামে চাঁদা সংগ্রহ করা হয়। দিন শেষে শিশুটি ক্লান্ত হয়ে পড়েন। রাতের খাবার খেয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিশুটি শুয়ে পড়েন। এ সময় ইসমাইল হোসেন শিশুটিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার অফিস কক্ষে যাওয়া জন্য ডাকেন। শিশুটি হুজুরকে অনুরোধ করে বলেন, ‘হুজুর আজ আমি টাকা সংগ্রহ করেছি। এ কারণে ক্লান্ত আছি।’ শিশুটি অপর এক শিশুর নাম বলে তাকে ডেকে নিয়ে যেতে বলেন। এর পরেও ইসমাইল হোসেন ওই শিশুকে তার অফিস কক্ষে নিয়ে শারিরীকভাবে নাজেহাল করেন। পরে শিশুটিকে তার কক্ষে পাঠিয়ে দেয় ইসমাইল। মঙ্গলবার সকালে শিশুটি মাদরাসা থেকে বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জানালে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।
পরে শিশুটির অভিভাবকসহ স্থানীয় লোকজন মাদরাসা কমিটির কাছে এ ঘটনার বিচার দাবি করলে গোটা এলাকায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি করেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে বদরগঞ্জ থানা পুলিশ আটক করে থানায় নেয়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ওই রাতে ইসমাইল হোসেনের নামে মামলা করেন।
শিশুটির সঙ্গে কথা হলে সে বলে, ‘রাতের খাবার খেয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। এ সময় হুজুর এসে আমাকে তার ঘরে যাওয়ার জন্য ডাকেন। আমি বলি হুজুর সারাদিন টাকা কালেকশন করেছি। আমি ক্লান্ত। আপনি হাবিবুল্লাহকে ডাকেন। এরপরও জোর করে অফিস ঘরে নিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমা দেয়। এক পর্যায়ে আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করে। আমি বাইরে যেতে চাইলেও যেতে দেয় না। রাত একটার সময় আমাকে ঘর থেকে বের করে দেন হুজুর। সকাল হলে বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটা আম্মুকে বলি।’
অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বলেন, এটা ষড়যন্ত্র। মাদরাসা এলাকার একটি পক্ষ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমি নির্দোষ।
মাদরাসা কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব বলেন, শিশুটির অভিযোগে প্রেক্ষিতে স্থানীয়দের আলোচনা চলছিল। এ সময় পুলিশ হুজুর ধরে থানায় নিয়ে যায়। তবে আমি যতদূর জানি ঘটনাটা সত্য নয়। এর আগে সে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে কিনা তা আমার জানা নেই।
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ঘটনাটি জানার পর মাদরাসা থেকে হুজুরকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শিশুটির বাবা থানায় নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করেন।
Posted ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin