একদা ভোট ছিল উৎসব, এখন তা আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে রক্ত ঝরেছে নরসিংদী, কুমিল্লা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে। মৃত্যু হয়েছে সাতজনের; নির্বাচন-উত্তর আরও পাঁচজন। বুথ দখল, বাক্স ছিনতাই, জবরদস্তিমূলক ভোট প্রদান, সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে নানা স্থানে। প্রথম ধাপের নির্বাচনও সংঘর্ষপূর্ণ ও রক্তাক্ত ছিল।
প্রথম ধাপের অভিজ্ঞতার পর কারও বুঝতে বাকি ছিল না, দ্বিতীয় ধাপও এর ব্যতিক্রম হবে না। তবে সংঘাত-সংঘর্ষ বন্ধে কর্তৃপক্ষের আরও জোরাল পদক্ষেপ প্রত্যাশিত ছিল। বাস্তবে তা দেখা গেল না। উপরন্তু দ্বিতীয় ধাপ নির্বাচনের আগেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। নির্বাচনের এক দিন আগেই বলেছিলেন- ঘরে ঘরে, মহল্লায় মহল্লায় পাহারা দিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো সম্ভব নয়। নির্বাচনের পর কর্তাব্যক্তিদের নানা মন্তব্য শুনলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বললেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঝগড়াঝাঁটি হয়েই থাকে। কেউ কেউ বললেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে আরও বেশি হতো। এসব কথাবার্তা থেকেই ধারণা করা যায়, পরিস্থিতি উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ কতটুকু আন্তরিক।
এটি সত্য যে, শুধু পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে খুনোখুনি বন্ধ হবে না; অবস্থার উন্নতি ঘটবে না। কারণ, সংঘাতের উপাদান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে প্রোথিত। প্রচলিত ধারার রাজনীতিতে দ্রুত স্থান করে নেওয়া সুবিধাবাদীদের শক্তি জনসমর্থন নয়; পেশি ও কালো টাকা। রাজনীতিতে পেশি ও কালো টাকার প্রভাব থাকলে নির্বাচনে তার প্রতিফলন ঘটবে না- তা কী করে আশা করি? ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ছিল; এবার তারা মাঠে নেই। কিছু বিএনপি সদস্য দলীয় মার্কা ছেড়ে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তবে সংখ্যায় খুবই কম। তারা হিসাবের মধ্যে নেই। তাই এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও খুনোখুনি দুই-ই হচ্ছে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বিদ্রোহীদের মধ্যে।
Posted ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin