করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দেশ। ভাইরাসটির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের তা-ব শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। বাংলাদেশেও হু হু করে বাড়ছে রোগী। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত দেশে মাত্র ১০ জন ওমিক্রন রোগী শনাক্ত হলেও হঠাৎ করে কভিড আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আশপাশের দেশে নতুন ভ্যারিয়েন্টের দাপট শুরু হওয়ায় নতুন করে উৎকণ্ঠার জন্ম নিয়েছে। সংক্রমণ মোকাবিলায় আগামী সাত দিনের মধ্যে নতুন করে বিধিনিষেধ জারির চিন্তা করছে সরকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ফের লকডাউনের চিন্তা আছে বলেও গতকাল জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ৬৫ দিন পর গত ২৪ ডিসেম্বর শনাক্তের হার আবারও ২ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৩.৯১ শতাংশে, যা ৯৭ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৮৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৭৫ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সবশেষ এক দিনে এর চেয়ে বেশি ৭৯৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৩ মাস আগে গত ৪ অক্টোবর। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন করোনা রোগী, যা নতুন বছরে এক দিনে সর্বাধিক মৃত্যু। এ ছাড়া নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার চলতি মাসের চার দিনই ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।
আসছে বিধিনিষেধ : গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমরা এক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্য করছি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। করোনাভাইরাস ও ওমিক্রনকে আমাদের রুখতে হবে। এ নিয়ে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে মিটিং করেছি। বৈঠকে কিছু প্রস্তাব ও পরামর্শ এসেছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত বিধিনিষেধসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তিনি বলেন, যানবাহনে কেউ মাস্ক ছাড়া চলাচল করলে জরিমানা করা হবে। যানবাহনে যাত্রী সংখ্যা অর্ধেক করার প্রস্তাব এসেছে। রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে মাস্ক ছাড়া গেলে দোকানদারের জরিমানা হবে, যে যাবে তারও জরিমানা হতে পারে। হোটেল-রেস্টুরেন্টে খেতে হলে টিকা কার্ড দেখাতে হবে। রাত ১০টার পরিবর্তে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল চলবে। সংক্রমণ বেশি বাড়লে স্কুল বন্ধের বিষয়ে চিন্তা করা হবে। অবস্থা আওতার বাইরে চলে গেলে লকডাউনের চিন্তাও মাথায় আছে। আমরা দেশকে নিরাপদে রাখতে চাই। শুধু সরকার কিংবা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একা পারবে না। সবাইকে সচেতন হতে হবে। ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা কয়েক গুণ বেশি। তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মিটিংয়ে ১৫ দিনের মধ্যে নতুন বিধিনিষেধ কার্যকর করার কথা হয়েছিল। কিন্তু ১৫ দিন অনেক বেশি। এর মধ্যে রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সাত দিনের মধ্যে বিধিনিষেধ প্রয়োগের কথা বলেছি। মন্ত্রিপরিষদ সচিবও একমত হয়েছেন।
Posted ৩:০৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২২
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin