বর্ষাকালে মুষলধারে বৃষ্টি নতুন কিছু নয়। কিন্তু গভীর রাতে প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে কলকাতায় যেভাবে একনাগাড়ে বাজ পড়ছে, তাতে শুধু আমজনতা নয়, বিস্মিত আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা! গত রোববার গভীর রাতে একনাগাড়ে বাজ পড়ার ঘটনায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, এমন একটানা বজ্রপাত গভীর রাতে হওয়ায় কেউ হতাহত হননি ঠিকই, কিন্তু বিকেলে বা সন্ধ্যায় এটা ঘটলে প্রবল বিপদের আশঙ্কা ছিল। ভরা বর্ষায় এমন বজ্রপাত মেঘের সঞ্চারের সঙ্গেই প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কারও কারও বক্তব্য, গত কয়েক বছরে বজ্রপাতের হার যেন বেড়েছে। এর সঙ্গে বাতাসের দূষণ বা অতিরিক্ত কার্বন কণার উপস্থিতির কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে বিজ্ঞানী মহলে
গরমকালে কালবৈশাখীর সঙ্গে বজ্রপাত আকছারই ঘটে। কিন্তু ভরা বর্ষায় এমন ঘটনাকে অস্বাভাবিক হিসাবেই দাগিয়ে দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ। ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলছেন, ‘বিরাট আকারের উল্লম্ব মেঘ যদি তৈরি হয়, তা হলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ, মেঘের উচ্চতা এবং আকার যত বাড়বে, ততই তার গর্ভে বজ্র সঞ্চারেরও আশঙ্কা বাড়বে।’
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, উল্লম্ব মেঘ তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে আবহমণ্ডলের কিছু বিশেষ পরিস্থিতি দরকার। বিশেষ করে, আবহমণ্ডলের মধ্য স্তরের তাপমাত্রা যদি নিম্ন স্তরের তুলনায় কম হয়, তা হলে দ্রুত উল্লম্ব মেঘ তৈরি হতে পারে।
গোকুলবাবু জানান, গত রোববার বাংলাদেশ এবং সন্নিহিত পশ্চিমবঙ্গের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত বিস্তৃত ছিল। তার উচ্চতা ছিল আবহমণ্ডলের মধ্য স্তর পর্যন্ত। সেটির কেন্দ্রে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূল, দু’দিক থেকেই জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস ঢুকেছে।
গোকুলবাবু আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় বাংলাদেশের বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি ছিল। জলীয় বাষ্পের এই তারতম্যের কারণেই বিরাট আকারের উল্লম্ব মেঘ তৈরি হয়েছিল। সেই মেঘের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি ছিল। সেই কারণেই সম্ভবত এত বেশি বাজ পড়েছে।
তার কথায়, ‘গভীর রাতে এমন বাজ পড়েছে বলে বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গিয়েছে। বিকেলে বা সন্ধ্যায় এমন বজ্রপাত হলে প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।’
সূত্র: আনন্দবাজার
Posted ৩:২৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin