কয়েকদিনের নিম্নমুখী ধারার পর মঙ্গলবার দেশের দুই শেয়ারবাজারে অধিকাংশ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছে। এর প্রভাবও দেখা যাচ্ছে মূল্য সূচকে। তবে গত কয়েকদিনের মত আজও দরবৃদ্ধির শীর্ষে অপেক্ষাকৃত দুর্বল মৌলভিত্তির শেয়ারগুলোর দাপট দেখা যাচ্ছে।
দুপুর ১২টায় দিনের লেনদেনের দুই ঘণ্টা পর প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ২৫৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডকে গতকালের তুলনায় দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। এ সময় দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ৮১ শেয়ার ও ফান্ড এবং দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল ৩৬টির।
অধিকাংশ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হওয়ার কারণে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৬২৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধি পাওয়ায় সূচকটি বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সর্বোচ্চ ৬২৬৮ পয়েন্ট পর্যন্ত উঠেছিল। এর পর কিছু শেয়ারের দর কমতে থাকলে সূচকও আগের অবস্থানের তুলনায় কিছুটা কমতে দেখা গেছে।
দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে একই সময়ে ১৭১ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড দর বেড়ে, ৬৪টি দর হারিয়ে এবং ৩১টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।
বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির প্রভাব প্রতিটি খাতেই রয়েছে। পাট খাতে মিশ্রধারা ছাড়া বাকি সব খাতের অধিকাংশ শেয়ারই দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছে।
বড় খাতগুলোর মধ্যে বীমা খাতের শেয়ারগুলোর গড় বাজারদর অন্য সব খাতের তুলনায় বেশি বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছে। দুপুর ১২টায় এ খাতের ৫১ শেয়ারের মধ্যে ৪২টিকে দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। গড়ে খাতটির সব শেয়ারের দর দেড় শতাংশ বেড়েছে।
ছোট খাতগুলোর মধ্যে চামড়া ও চামড়জাত পণ্য খাতের শেয়ারের দর তুলনামূলক বেশি বেড়েছে। এ খাতটির ৬ কোম্পানির মধ্যে ৪টির দর বেড়েছে এবং গড়ে শেয়ারদর বেড়েছে পৌনে ৩ শতাংশ।
দুপুর ১২টায় ব্যাংক খাতের লেনদেনে আসা ৩০ কোম্পানির মধ্যে ১৮টি দর বেড়ে এবং ৩টিকে দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২২ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৭টি।
প্রকৌশল খাতের ২৮ শেয়ার দর বেড়ে এবং ১১টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৭ শেয়ার দর বেড়ে এবং ১২টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।
এ সময় বস্ত্র খাতের ৫৮ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ৩৮টি, দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৬টি এবং দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল ৪টির। এ খাতের সব শেয়ারের গড় দরবৃদ্ধির হার ছিল ১ শতাংশ।
সর্বাধিক ১০ শতাংশ দর বেড়ে দরবৃদ্ধির তালিকার শীর্ষে অবস্থান করতে দেখা গেছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি আরএন স্পিনিংকে, কেনাবেচা হচ্ছিল ৭ টাকা ৭০ পয়সা দরে। ৭ লাখ ৭১ হাজারের বেশি শেয়ারের ক্রয় আদেশের বিপরীতে এ সময় কোনো বিক্রি আদেশ ছিল না।
দরবৃদ্ধির তালিকায় এর পরের শেয়ারগুলো ছিল যথাক্রমে শ্যামপুর সুগার মিলস, জিলবাংলা সুগার মিলস, তমিজুদ্দিন টেক্সটাইল, পেপার প্রসেসিং, ফাইন ফুডস, এনআরবিসি ব্যাংক, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, তুংহাই নিটিং, ফরচুন সুজ, সিএনএটেক্স, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস, ফ্যামিলিটেক্স, তাল্লু স্পিনিং, ইয়াকিন পলিমার, ফু-ওয়াং সিরামিক, প্রিমিয়ার লিজিং, শমরিতা হাসপাতাল, এডভেন্ট ফার্মা ও সাভার রিফ্যাক্টরিজ।
দুপুর ১২টায় পৌনে ৭ শতাংশ দর হারিয়ে দরপতনের শীর্ষে অবস্থান করছিল সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। গতকালই শেয়ারটি ১৬ টাকা থেকে এক লাফে সাড়ে ৯৩ টাকায় উঠেছিল। প্রায় ৫ শতাংশ দর হারিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল নিউ লাইন ক্লোথিংস কোম্পানির শেয়ার।
আজকের লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে ৭৭১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
একক কোম্পানি হিসেবে ৪৯ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে বেক্সিমকো লিমিটেড সবার ওপরে ছিল। ৩৭ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে পাওয়ার গ্রিড এবং সাড়ে ১৯ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল এডভেন্ট ফার্মা।
খাতওয়ারি হিসেবে ১০৭ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত, যা এ সময় পর্যন্ত মোট লেনদেনের প্রায় ১৪ শতাংশ।
Posted ৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin