টেলিফোনে বিয়ে! প্রবাসে অনেকের মুখে এ কথাটি শোনা যায়। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ প্রবাসী কর্মসংস্থান, উন্নত জীবনের আশায় বিশ্বের অনেক ধনী দেশে বসবাস করছেন। এদের অধিকাংশই প্রবাস জীবন শুরু করেন তরুণ বয়সে। কয়েক বছর বিদেশে করে দেশে গিয়ে বিয়ে করেন তারা।
সম্প্রতি প্রবাসে টেলিফোনে বিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনই একটি বিয়ে হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সানিয়া ইসলামের সঙ্গে ইতালি প্রবাসী সাইফুল সরকারের। গত শুক্রবার (১২ নভেম্বর) তাদের বিয়ে হয়। বিয়ে ঘিরে ইতালি প্রবাসীদের মধ্যে ছিল নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন।
এছাড়াও দুই বছর আগে একই গ্রামের ইতালি ভেনিস প্রবাসী বুলবুল আহমেদের বিয়েও হয়েছিল টেলিফোনে। মাঝে বেশ কয়েকটি বিয়ে হয় টেলিফোনে।
জীবিকার তাগিদে পরিবারের সবার প্রিয় সাইফুল বেশ কয়েক বছর যাবত বাস করছেন ইতালির ভেনিসে। ভালো আয়ও করছে সে। পরিবারের ছোট ডানপিটে ছেলিটির জন্য, সবাই মিলে বউ ঠিক করে একই গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার ৮ নং ওয়ার্ডের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সানিয়া ইসলামের সঙ্গে।
ইতালি প্রবাসী বর, নেই যৌতুক দেনা পাওয়ার হিসেব, খুশি মেয়ের পরিবার। মিষ্টি মেয়ে , ভালো ছাত্রী, শিক্ষিত পরিবার তাই অপেক্ষা করতে চায়না ছেলে পক্ষও। কিন্তু বর সাইফুল সরকার হঠাৎ বিয়ের সিদ্ধান্ত; কিন্তু ছুটি নিতে পারেনি তিনি। পরে পরিবারের সিদ্ধান্তে অবশেষে টেলিফোনে বিয়ের আয়োজন হয় এ দম্পতির। আর এতেই উৎসবে মেতে উঠেন ইতালি প্রবাসীরা।
বর ইতালির স্বপ্নের শহর ভেনিস শহরে। আর কনে সানিয়া ইসলাম কিশোরগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের আব্দুল্লাহপুর গ্রামে। বিয়ে বলে কথা! এই সুযোগে বর সাইফুলের বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয় স্বজন ও ভেনিস প্রবাসীরা মিলে উৎসবে মেতেছিল বিয়ের আনন্দে। হোক না টেলিফোনের বিয়ে, কিন্তু আনন্দের কমতি ছিলনা বিয়ে উৎসবে। প্রবাসে এমন উৎসবে আনন্দে অংশ নিয়ে খুশি ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এদিকে ভেনিস এলাকার জাহাজ নির্মাণ শিল্প ব্যবসায়ী ও কিশোরগঞ্জ জেলা সমিতি ইতালির সভাপতি সোলমান হোসেন বলেন, প্রায়ই টেলিফোনে বিয়ে হচ্ছে বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যে। দিন দিন তা বৃদ্ধিও পাচ্ছে কমিউনিটিতে।
ইতালি প্রবাসী মিসেস পিংকি ও আব্দুল্লাহপুর গ্রামের ইতালি প্রবাসী মতিউর রহমান বলেন, প্রবাসে থেকেও বাংলাদেশের বিয়ে উৎসবের আমেজ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। যদিও বর ও কনের মধ্যে দূরত্ব হাজার হাজার কিলোমিটার।
কিশোরগঞ্জ সমিতি ইতালির সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের অঞ্চলের কয়েকটি বিয়ে টেলিফোনে সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা ভালো আছেন। দুই পরিবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত হলে, পরে আমাদের সহযোগিতা চান দেশ থেকে পরিবারের সদস্যরা। আমরা ছেলের দিক থেকে, সব দিক নিশ্চিত হয়ে বিয়ে আয়োজনের ব্যবস্থা করি ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করি। আত্নীয় স্বজনের বাইরে এ ধরনের বিয়ে হলে, এলাকার মানুষের নিকট থেকে জেনেশুনে ওই পাত্রের নিকট টেলিফোনে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে অভিভাবকের প্রতি অনুরোধ করেন কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মশিউর।
Posted ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin