গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় হঠাৎ করে পদ্মা রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার মাত্র ১০ মিনিটের তাণ্ডবে পদ্মাপাড়ের ৫টি বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে যায়। এ সময় দ্রুততার সঙ্গে আরও ৩৭টি পরিবারের বসতঘর সরিয়ে নেওয়া হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিআইডব্লিউটিএ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবস্থাপনার কারণে নদীভাঙনে ৪২টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। পদ্মাপাড়ের আরও শত শত স্থাপনা ও বাড়িঘর এখন হুমকির মধ্যে রয়েছে। লঞ্চঘাট এলাকায় কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হলেও সবচেয়ে ভাঙনপ্রবণ মজিদ শেখেরপাড়া এলাকায় কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মজিদ শেখেরপাড়ায় ভাঙনের কারণে নদীপাড়ের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি সরানোর কাজে ব্যস্ত। কেউ খুঁটি খুলছেন, কেউ বা নিয়ে যাচ্ছেন ঘরের চালা। চোখের সামনে একটু একটু করে পদ্মা গ্রাস করছে অনেকের বসতভিটা। ভাঙন রোধে দীর্ঘদিনেও স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবারের ভাঙনে অন্তত ১৫০ মিটার এলাকা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. রহমান মণ্ডল জানান, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের অস্তিত্ব থাকবে না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফা মুন্সী বলেন, নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ে ধরনা দিয়ে আসছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। চোখের সামনে সচ্ছল পরিবারগুলো অসহায় হয়ে পড়ছে। কিছুই করতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এই এলাকায় নদী শাসনের কাজ না করা হলে শিগগির মানচিত্র থেকে দৌলতদিয়ার নাম মুছে যাবে।
ইউএনও মো. আজিজুল হক খান মামুন বলেন, হঠাৎ দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৪২টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পরে তাদের ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভাঙন পরিদর্শনে এসে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম বলেন, হঠাৎ করে লঞ্চঘাট ও ১নং ফেরিঘাট এলাকার মাঝামাঝি তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন রোধে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে কাজ শুরু করা হবে।
Posted ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১
dailymatrivumi.com | Mohammad Salahuddin